ভোমরা দিয়ে ১৩ দিনে ৩৯ হাজার ২৫৩ মে. টন চাল আমদানি, বাজারে কেজিতে দাম কমেছে ২ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

বাজারের উর্ধ্বমুখী চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। অনুমতি পাওয়ার পর গত ১৯ আগস্ট থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। আমদানির শুরু থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গত ১৩দিনে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৯৯৬টি গাড়িতে করে মোট ৩৯ হাজার ২৫৩ দশমিক ৭৮৯ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত দেশের শীর্ষ ৫১টি চাল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান এই চাল আমদানি করে।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা যায়, দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য নির্বাচিত ২৪২টি ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ ও ৩৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল বরাদ্দ প্রদান করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ লুৎফর রহমান কর্তৃক গত ১০ আগস্ট স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বরাদ্দ প্রাপ্ত আমদানিকারকগণকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমুদয় চাল বাংলাদেশে বাজারজাত করতে বলা হয়। সে অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত দেশের শীর্ষ ৫১টি চাল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান ভোমরা বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে চাল আমদানি করেছে।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে গত ১৯ আগস্ট থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিন ভারতীয় ২৪টি ট্রাকে ৯১৮ মেট্রিক টন চাল ভোমরা বন্দরে ঢোকে। শুরু থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ভারত থেকে ৯৯৬টি গাড়িতে করে মোট ৩৯ হাজার ২৫৩ দশমিক ৭৮৯ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে সব শেষ ৩১ আগস্ট ১১৪টি ভারতীয় গাড়িতে মোট ৫৩১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গত ১৩ দিনে যশোরের মজুমদার এন্ড সন্স সর্বোচ্চ ৫৯৯০ দশমিক ৬৯৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। ২৫৫৬ দশমিক ৮৯২ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চাল আমদানিকারক যশোরের বাগআছড়ার সর্দার অ্যালুমিনিয়াম স্টোর। ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে ভারতীয় চাল আমদানি শুরু হওয়ায় সাতক্ষীরাসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাজারগুলোতে চালের দাম কেজিতে ২/৩ টাকা কমেছে। দেশি ২৮ জাতের চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা এবং ২৮ জাতের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। যা আগে ছিল ৬৬ ও ৬২ টাকা কেজি।

ভারতীয় এলসির স্বর্ণ জাতের চাল ৫২ টাকা এবং মোটা চাল (নুরজাহান) ৫০ টাকা, মিনিকেট ৭২/৭৪ টাকা এবং নাজির চাল ৭০/৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন আড়তের মালিকরা জানান, ভারতীয় চাল বাজারে আসায় মোটা জাতের চালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে। তবে দেশি অন্য জাতের চালের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি জাতের চালের বেচা কেনা আগের তুলনায় কমে গেছে। বাজারে এলসির চালের সরবরাহ বাড়লে দাম আরো একটু কমতে পারে বলে জানান তারা।

ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, চার মাস বন্ধ থাকার পর ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১৯ আগস্ট থেকে আবার ভারতীয় চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা তাদের নির্ধারিত বরাদ্দের চাল আমদানি করতে পারবেন।

ভোমরা স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মোঃ শওকত হোসেন জানান, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল এ বন্দর দিয়ে সর্বশেষ চাল আমদানি হয়। গত ১৮ আগস্ট থেকে আবারো চাল আমদানি শুরু হয়েছে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গত ১৩ দিনে ৯৯৬টি গাড়িতে করে মোট ৩৯ হাজার ২৫৩ দশমিক ৭৮৯ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই চালের গাড়ি ঢুকছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন